দুধ মানবদেহের জন্য গুরুত্তপুরন উপাদান।দুধে প্রচুর ক্যালসিয়াম,প্রোটিন ও ভিটামিন থাকে।দুধ কে বালেন্সেড অফ ডায়াট বলা হয়।সঠিক খাবারের সাথে দুধ না খেলে শরীরের মারাত্মক সমস্যা দেখা দিতে পারে।তাই কোন কোন খাবার দুধের সাথে এড়িয়ে চলা উচিত তা আমাদের সকলের জানা উচিত।
এই জাতিও খাবার গুলো খেলে হতে পারে পেটের গোলমাল ও বিশক্রিয়া।ভালো পরামর্শ ও সঠিক
গাইডলাইন পেলে এই ধরনের মারাতক সমসস্যার পূর্বেই আমরা সচেতন হতে পারি।তাই সুস্থ
থাকতে নিম্নের বিষয়গুলো বিশেষভাবে নজর রাখতে হবে।
পেজ সুচিপত্রঃ দুধের সাথে ভুলেও যেসব খাবার খাবেন না
- দুধের সাথে মাছ খাবেন না।
- দুধের সাথে আম খাবেন না
- দুধের সাথে চা বা কফি খাবেন না
- দুধের সাথে ডাল খাবেন না।
- দুধের সাথে ডিম খাবেন না।
- দুধের সাথে মাংস খাবেন না।
- দুধের সাথে টকজাতীয় খাবার খাবেন না।
- দুধের সাথে ঝাল মসল্লা খাবার খাবেন না।
- দুধের সাথে পিয়াজ খাবেন না।
- নাদুধের সাথে তেতুল খাবেন না।
দুধের সাথে মাছ খাবেন না:
দুধ ও মাছ একসাথে খেলে স্কিন আ্যলারজি হতে পারে।সেখেত্রে ত্বকের মারাত্মক
সমস্যা দেখা দিতে পাড়ে।বিশেষকরে যাদের স্কীন অ্যালারজি আছে তাদের ক্ষেত্রে এই
কম্বিনেশন খাওয়া থেকে এড়িয়ে চলা উচিত।
এই দুই খাদ্যের তাপমাত্রা ও প্রোটিনের ধরণ ভিন্ন হওয়াই হজমের সময় শরীর
বিভ্রান্ত হয়ে পড়ে।ফলে ত্বকে সাদা দাগ বা ছোপ দেখা দিতে পারে।\
মাছ খাওয়ার অন্তত দুই বা তিন ঘণ্টা পর দুধ খাওয়া উচিত ।এর আগে খেলে বিষ ক্রিয়ার
সম্ভাবনা থাকে ।ওনেক ক্ষেত্রে
অ্যাসিডিটি ও বমি ও হতে পারে।
দুধের সাথে আম খাবেন নাঃ
আম ও দুধ এক সাথে খেলে অনেকের পেটের সমস্যা হয়।আমে থাকা অ্যাসিড ও দুধের
ক্যালসিয়াম একে ওপরের সাথে বিক্রিয়া করে হজমে সমস্যা করে ।মনে রাখতে হবে আম
খাওয়ার পর দুধ পান করতে হলে অন্তত ১ ঘণ্টা বিরত নেওয়া উচিত ।
দুধের সাথে চা বা কফি খাবেন নাঃ
চা ও কফির ট্যানিন দুধের প্রোটিন ভেঙে দেয়, ফলে পুষ্টিগুণ কমে যায়।
এছাড়া ক্যাফেইন ও দুধের মিশ্রণ শরীরে অ্যাসিডিটি ও ডিহাইড্রেশন তৈরি করতে পারে।
তাই আলাদা সময়ে পান করাই ভাল।
দুধের সাথে ডাল খাবেন নাঃ
ডাল বা শস্যজাতীয় খাবারের সাথে দুধ খেলে হজমের জন্য প্রয়োজনীয় এনজাইমের
কার্যকারিতা ব্যাহত হয়। এতে পেটে গ্যাস ও ফাঁপাভাব দেখা দিতে পারে।
বিশেষ করে মসুর ডাল ও দুধের সংমিশ্রণ হজমের জন্য ভালো নয়।
দুধের সাথে ডিম খাবেন নাঃ
দুধ ও ডিম উভয়ই প্রোটিন সমৃদ্ধ, কিন্তু একসাথে খেলে হজমে বাধা সৃষ্টি করে।
ডিমের প্রোটিন হজম হতে সময় নেয়, আর দুধ পেটে জমাট বাঁধতে পারে। ফলে গ্যাস,
অম্লতা ও পেটব্যথা হতে পারে।
পাশাপাশি অতিরিক্ত প্রোটিন শরীরে জমে কিডনির উপর চাপ ফেলে। তাই
সকালের নাস্তায় ডিম খেলে অন্তত আধা ঘণ্টা পরে দুধ পান করাই ভালো।
দুধের সাথে মাংস খাবেন নাঃ
মাংস ও দুধ উভয়ই প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার। একসাথে খেলে প্রোটিনের আধিক্য হজমে
সমস্যা ও অ্যাসিডিটি তৈরি করে।
আয়ুর্বেদে বলা হয়, মাংস ও দুধের মিশ্রণ শরীরে বিষাক্ত পদার্থ তৈরি করতে পারে,
যা দীর্ঘমেয়াদে ক্ষতিকর।
দুধের সাথে তেতো খাবেন নাঃ
তেতো করলা বা তেতো শাকের সাথে দুধ খেলে হজমের সমস্যা হতে পারে।
তেতো খাবারের রাসায়নিক উপাদান দুধের সাথে বিক্রিয়া করে বমি বমি ভাব ও পেটের
অস্বস্তি তৈরি করতে পাড়ে।
দুধের সাথে টকজাতীয় খাবার খাবেন নাঃ
লেবু, কমলা, আনারসের মতো টক ফলের সাথে দুধ খেলে দুধ জমাট বেঁধে যায়। এর ফলে
পেটে ব্যথা, হজমের সমস্যা এবং ডায়রিয়া হতে পারে।এছাড়া টক ফল ও দুধ একসাথে খাওয়া শরীরের প্রয়োজনীয় এনজাইমের কার্যকারিতা কমিয়ে দেয়। তাই এগুলো আলাদা সময়ে খাওয়াই ভালো।
দুধের সাথে পেঁয়াজে খাবেন নাঃঃপিয়াজে থাকা সালফারিক উপাদান দুধের উপকারিতা হ্রাস করে। এটি হজমে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে এবং পাকস্থলিতে অস্বস্তি হয়।
পেঁয়াজ ও দুধ একসাথে খাওয়া হলে পেটে ব্যথা, গ্যাস এবং বমির সম্ভাবনা থাকে
দুধের সাথে ঝাল মসল্লা খাবার খাবেন নাঃ
অতিরিক্ত ঝালযুক্ত খাবারের সাথে দুধ খেলে পেটে প্রদাহ হতে পারে।
ঝাল ও দুধের মিশ্রণ হজমে ব্যাঘাত ঘটায় এবং অম্লতা বাড়িয়ে দেয়।
উপসংহারঃ
দুধ একটি পরিপূর্ণ পুষ্টিসমৃদ্ধ খাদ্য হলেও, এর সঙ্গে সব ধরনের খাবার একত্রে
গ্রহণ করাটা নিরাপদ নয়। আমরা দৈনন্দিন জীবনে অনেক সময় না জেনে এমন কিছু
খাবারের সঙ্গে দুধ খেয়ে ফেলি, যা আমাদের দেহে নানা জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে।
যেমন—ত্বকে অ্যালার্জি, পেটে গ্যাস, হজমে সমস্যা, এমনকি দীর্ঘমেয়াদে বিভিন্ন
স্বাস্থ্য ঝুঁকি দেখা দিতে পারে। সঠিক খাদ্যাভ্যাস গড়ে তুলতে হলে জানতে হবে
কোন খাবার কোনটির সঙ্গে মিলিয়ে খাওয়া উচিত আর কোনটি নয়। বিশেষত দুধের মতো
সংবেদনশীল খাবারের সঙ্গে ভুল কম্বিনেশন এড়িয়ে চললে আমরা আরও স্বাস্থ্যবান
থাকতে পারি। তাই সচেতনতা ও স্বাস্থ্যজ্ঞানই আমাদের সুস্থ জীবনের চাবিকাঠি
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url